রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৩ অপরাহ্ন
মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কালের খবর : তাড়াশে ভাদ্র মাসে এবং তাল নিয়ে এমন অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে আমাদের। গ্রামের মুরব্বিরা বলে ভাদ্র মাসের গরমে তাল পাকে। তাই সহজেই বোঝা যায় ভাদ্র মাসের সঙ্গে তালের একটা সম্পর্ক রয়েছে। শুধু ভাদ্র মাস নয় ভাদ্র মাসের গরমের সঙ্গে এর একটা সম্পর্ক বিদ্যমান। এই ভাদ্র মাস থেকেই বাজারে উঠতে থাকে পাকা তাল। যা দিয়ে নানা রকম সুস্বাদু পিঠা বানানো হয়। কেউবা আবার তালের রস দিয়ে পায়েস তৈরি করে।
পাকা তালের মিষ্টি ঘ্রাণে মন ভরে যায়। গ্রামে-শহরে ঘরে ঘরে তালের পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। ভাদ্র মাসে তালের পিঠা না খেলে যেন একটা অপূর্ণতাই থেকেই যায়। ভাদ্রের গরমেই মূলত তাল পাকে। পিঠাপ্রেমী মানুষরা বাজার থেকে তাল কিনে পিঠা তৈরির জন্য। এ সময় প্রতিটি ছোট-বড় বাজারেই পাকা তাল পাওয়া যায়। তবে পাকা তালের রস করা অপেক্ষাকৃত কঠিন।
রস বের করে তা কাপড়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতে হয়। তাহলে তালের বিষপানি পড়ে যায়, মুরব্বিদের ভাষ্যমতে। প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা এই তালের রস ঝুলিয়ে রেখে তারপর রস দিয়ে পিঠা বা পায়েস তৈরি করা হয়। এ সময় মেয়েরা বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে, বা বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় মেয়ের মা-বাবা। ভাদ্র মাসে জামাইকে তালের পিঠা খাওয়ানো একটা অন্যরকম অনুভূতির বিষয় ছিল, যা গ্রামীণ সংস্কৃতির একটি অংশ।
তবে এই সংস্কৃতি বর্তমানে তেমনটা নেই বললেই চলে। বাজারে পাকা তালও কম পাওয়া যায়, কারণ গ্রীষ্মের তাপদাহে তালের শাঁস বিক্রি করে ফেলে। তাই অনেক গাছ হয়ে পড়ে তালশূন্য। যা হোক এই ভাদ্রের তালের পিঠার আমেজ চলতে থাকুক বাংলার ঘরে ঘরে। আমাদের নতুন প্রজন্ম এ সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হোক। বেঁচে থাকুক আমাদের সংস্কৃতি। ঘরে ঘরে তাল দিয়ে পিঠাণ্ডপায়েস তৈরির ধুম পড়ুক আবারও।